দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে হয়েছে। এতে করে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ খুশি। তবে কিছু বিষয় কম গুরুত্ব দেয়ার ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহায়ক বাজেট এ অঞ্চলের জন্য প্রণয়ন হয় নি বলেও অভিযোগ করেছেন সচেতন মহলের অনেকে। কালাবদর-তেতুলিয়া নদীতে বরিশাল-ভোলা সেতু, বিষখালী নদীতে পাথরঘাটা-বরগুনা সেতু ও পায়রা নদীতে আমতলী-বরগুনা সেতুর কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা আছে এবারের বাজেটে। এছাড়া বরিশাল বিমান বন্দর ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জায়গা বৃদ্ধিকরণ, মহিলা পলিকেটনিক ইনস্টিটিউট ও হাইকেট পার্ক এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৪০টি সাইকোন শেল্টার নির্মাণেও বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তবে এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৮ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে ৭ শতাংশ বরাদ্দ করা, শিক্ষার জাতীয়করণ এবং করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের এ বছরের ফি মওকুফ, জনগণের জন্য পূর্ণাঙ্গ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা ইত্যাদি দাবী নিয়ে মাঠে নেমেছে এখানকার বাম সংগঠনগুলোর কয়েকটি। এবারের বাজেটকে শিক্ষাবান্ধব হিসেবে উল্লেখ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন। করোনাকালীন সময়ে দূরদর্শী বাজেট প্রণয়ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের আস্থা অর্জন করবেন বলেই ধারণা করছেন তিনি। এছাড়া তিনি কামনা করেন, বরিশাল অঞ্চলের শিক্ষা কার্যক্রম উন্নয়নে বর্তমান বাজেটের কার্যকর বরাদ্দ নিশ্চিত হবে। এই বাজেটে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখায় দক্ষিণাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বাড়বে আশা শিল্পোদ্যোক্তাদের। করোনায় চাকুরী হারানো মানুষের কর্মের নিশ্চয়তার জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প পুনরুদ্ধারে এসব ব্যবসার মালিকদের প্রণোদনার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বরিশাল বিসিক(ক্ষুদ্র ও কুটির) শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান। বাজেট বাস্তবায়নসহ ব্যবসা বাণিজ্যে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে যোগ্য ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানোর দাবিও জানান তিনি। অপরদিকে করোনার সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পানে’ ক্ষতিগ্রস্ত এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরী শিল্প। এসব খাত পুনঃউন্নয়নে সরকারকে নজর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু। এছাড়া নদীমাতৃক এ অঞ্চলে নদী ভাঙন রোধ ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং নদী শাসনে চলতি বাজেটেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ দাবি করেছেন তিনি।
এ অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্পে বেশি বরাদ্দে খুশী হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবে উপকূলীয় এক কোটি মানুষের চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে চলতি বাজেটেই বরিশালে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং উন্নয়ন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ, ভাঙ্গা থেকে-পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত রেল ও ফোরলেন সড়ক নির্মাণসহ একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের বরাদ্দ চান অর্থনীতিবিদ মো. আক্তারুজ্জামান খান। তবে এ অঞ্চলের করোনা বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট পুনঃমূল্যায়নের কথা বললেন প্রগতিশীল চিকিৎসক ফোরামের সংগঠক ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তিনি জানান, বরিশাল বিভাগে করোনা রোগ নির্ণয় কেন্দ্র মাত্র একটি। চিকিৎসা কেন্দ্রের বেহাল দশা। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এই অঞ্চলের প্রতিটি জেলায় রোগ নির্ণয় কেন্দ্র স্থাপন, চিকিৎসা কেন্দ্রে ভেন্টিলেটর – আইসিইউ বৃদ্ধি করণ না করা গেলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
Leave a Reply